চার প্রহর রাতের বৃষ্টিভেজা ভারী হাওয়ায়

থমকে আছে সকাল বেলাটা,

রাত জাগার ভারে যেন মুদে এসেছে

মলিন আকাশের চোখের পাতা।

বাদলার পিছল পথে পা টিপে চলেছে প্রহরগুলো।

যত সব ভাবনার আবছায়া

উড়ছে ঝাঁক বেঁধে মনের চার দিকে

হালকা বেদনার রঙ মেলে দিয়ে।

তাদের ধরি-ধরি করে মনটা,

ভাবি বেঁধে রাখি লেখায়;

পাশ কাটিয়ে চলে যায় কথাগুলো।

এ কান্না নয়, হাসি নয়, চিন্তা নয়, তত্ত্ব নয়,

যত-কিছু ঝাপসা-হয়ে-যাওয়া রূপ,

ফিকে-হয়ে-যাওয়া গন্ধ,

কথা-হারিয়ে-যাওয়া গান,

তাপহারা স্মৃতিবিস্মৃতির ধূপছায়া--

সব নিয়ে একটি মুখ-ফিরিয়ে-চলা স্বপ্নছবি

যেন ঘোমটাপরা অভিমানিনী।

মন বলছে, ডাকো ডাকো,

ওই ভেসে-যাওয়া পারের খেয়ার আরোহিণী,

ওকে একবার ডাকো ফিরে;

দিনান্তের সন্ধ্যাদীপটি তুলে ধরো

ওর মুখের দিকে;

করো ওকে বিদায়-বরণ।

বলো, "তুমি সত্য, তুমি মধুর,

তোমারই বেদনা আজ লুকিয়ে বেড়ায়

বসন্তের ফুল ফোটা আর ফুল ঝরার ফাঁকে।

তোমার ছবি-আঁকা অক্ষরের লিপিখানি

সবখানেই,

নীলে সবুজে সোনায়

রক্তের রাঙা রঙে।'

তাই আমার আজ মন ভেসেছে

পলাশবনের চিকন ঢেউয়ে,

ফাটা মেঘের কিনার দিয়ে উপচে পড়া

আচমকা রোদ্দুরের ছটায়।