ছেঁড়াখোঁড়া মোর পুরোনো খাতায়

ছবি আঁকি আমি যা আসে মাথায়

যক্ষনি ছুটি পাই।

বঙ্কিম মামা বুঝিতে পারে না--

বলে যে, কিছুই যায় না তো চেনা;

বলে, কী হয়েছে, ছাই!

আমি বলি তারে, এই তো ভালুক,

এই দেখো কালো বাঁদরের মুখ,

এই দেখো লাল ঘোড়া--

রাজপুত্তুর কাল ভোর হলে

দণ্ডক বনে যাবেন যে চ'লে--

রথে হবে ওরে জোড়া।

উঁচু হয়ে আছে এই-যে পাহাড়,

খোঁচা খোঁচা গায়ে ওঠে বাঁশ-ঝাড়,

হেথা সিংহের বাসা।

এঁকে বেঁকে দেখো এই নদী চলে,

নৌকো এঁকেছি ভেসে যায় জলে,

ডাঙা দিয়ে যায় চাষা।

ঘাট থেকে জল এনেছে ঘড়ায়--

শিবুঠাকুরের রান্না চড়ায়

তিন কন্যা যে এই।

সাদা কাগজের চর করে ধূ ধূ,

সাদা হাঁস দুটো ব'সে আছে শুধু,

কেউ কোত্থাও নেই।

গোল ক'রে আঁকা এই দেখো দিখি,

সূর্যের ছবি ঠিক হয় নি কি,

মেঘ এই দাগ যত।

শুধু কালি লেপা দেখিছ এ পাতে--

আঁধার হয়েছে এইখানটাতে,

ঠিক সন্ধ্যার মতো।

আমি তো পষ্ট দেখি সব-কিছু--

শালবন দেখো এই উঁচুনিচু,

মাছগুলো দেখো জলে।

"ছবি দেখিতে কি পায় সব লোকে--

দোষ আছে তোর মামারই দু চোখে'

বাবা এই কথা বলে।