ছেলেতে মেয়েতে করে খেলা

ঘাসের 'পরে সাঁঝের বেলা।

ঘোর ঘোর গাছের তলে তলে,

ফাঁকায় পড়েছে মলিন আলো,

কোথাও যেন সোনার ছায়া ছায়া

কোথাও যেন আঁধার কালো কালো।

আকাশের ধারে ধারে ঘিরে,

বসেছে রাঙা মেঘের মেলা-

শ্যামল ঘাসের 'পরে, সাঁঝে

আলো-আঁধারের মাঝে মাঝে,

ছেলেতে মেয়েতে করে খেলা।

ওরা যে কেন হেসে সারা,

কেন যে করে অমনধারা,

কেন যে লুটোপুটি,

কেন যে ছুটোছুটি,

কেন যে আহ্লাদে কুটিকুটি।

কেহ বা ঘাসে গড়ায়,

কেহ বা নেচে বেড়ায়,

সাঁঝের সোনা-আকাশে

হাসির সোনা ছড়ায়।

আঁখি দুটি নৃত্য করে,

নাচে চুল পিঠের 'পরে,

হাসিগুলি চোখে মুখে লুকোচুরি খেলা করে।

যেন মেঘের কাছে ছুটি পেয়ে

বিদ্যুতেরা এল ধেয়ে,

আনন্দে হল রে আপন-হারা।

ওদের হাসি দেখে খেলা দেখে

আকাশের এক ধারে থেকে

মৃদু মৃদু হাসছে একটি তারা।

ঝাউগাছে পাতাটি নড়ে না,

কামিনীর পাপড়িটি পড়ে না।

আঁধার কাকের দল

সাঙ্গ করি কোলাহল

কালো কালো গাছের ছায়,

কে কোথায় মিশায়ে যায়--

আকাশেতে পাখিটি ওড়ে না।

সাড়াশব্দ কোথায় গেল,

নিঝুম হয়ে এল এল

গাছপালা বন গ্রামের আশেপাশে।

শুধু খেলার কোলাহল,

শিশুকন্ঠের কলকল,

হাসির ধ্বনি উঠেছে আকাশে।

কত আর খেলবি ও রে,

নেচে নেচে হাতে ধ'রে

যে যায় ঘরে চলে আয় ঝাট্‌,

আঁধার হয়ে এল পথঘাট।

সন্ধ্যাদীপ জ্বলল ঘরে,

চেয়ে আছে তোদের তরে-

তোদের না হেরিলে মার কোলে

ঘরের প্রাণ কাঁদে সন্ধে হলে।