তুমি দেবে, তুমি মোরে দেবে,

গেল দিন এই কথা নিত্য ভেবে ভেবে।

সুখে দুঃখে উঠে নেবে

বাড়ায়েছি হাত

দিনরাত;

কেবল ভেবেছি, দেবে, দেবে,

আরো কিছু দেবে।

দিলে, তুমি দিলে, শুধু দিলে;

কভু পলে পলে তিলে তিলে,

কভু অকস্মাৎ বিপুল প্লাবনে

দানের শ্রাবণে।

নিয়েছি, ফেলেছি কত, দিয়েছি ছড়ায়ে,

হাতে পায়ে রেখেছি জড়ায়ে

জালের মতন;

দানের রতন

লাগিয়েছি ধুলার খেলায়

অযত্নে হেলায়,

আলস্যের ভরে

ফেলে গেছি ভাঙা খেলাঘরে।

তবু তুমি দিলে, শুধু দিলে, শুধু দিলে,

তোমার দানের পাত্র নিত্য ভরে উঠিছে নিখিলে।

অজস্র তোমার

সে নিত্য দানের ভার

আজি আর

পারি না বহিতে।

পারি না সহিতে

এ ভিক্ষুক হৃদয়ের অক্ষয় প্রত্যাশা,

দ্বারে তব নিত্য যাওয়া-আসা।

যত পাই তত পেয়ে পেয়ে

তত চেয়ে চেয়ে

পাওয়া মোর চাওয়া মোর শুধু বেড়ে যায়;

অনন্ত সে দায়

সহিতে না পারি হায়

জীবনে প্রভাত-সন্ধ্যা ভরিতে ভিক্ষায়।

লবে তুমি, মোরে তুমি লবে, তুমি লবে,

এ প্রার্থনা পুরাইবে কবে।

শূন্য পিপাসায় গড়া এ পেয়ালাখানি

ধুলায় ফেলিয়া টানি,

সারা রাত্রি পথ-চাওয়া কম্পিত আলোর

প্রতীক্ষার দীপ মোর

নিমেষে নিবায়ে

নিশীথের বায়ে,

আমার কণ্ঠের মালা তোমার গলায় প'রে

লবে মোরে লবে মোরে

তোমার দানের স্তূপ হতে

তব রিক্ত আকাশের অন্তহীন নির্মল আলোতে।