ধর্মের বেশে মোহ যারে এসে ধরে

অন্ধ সে জন মারে আর শুধু মরে।

নাস্তিক সেও পায়ে বিধাতার বর,

ধার্মিকতার করে না আড়ম্বর।

শ্রদ্ধা করিয়া জ্বালে বুদ্ধির আলো,

শাস্ত্রে মানে না, মানে মানুষের ভালো।

বিধর্ম বলি মারে পরধর্মেরে,

নিজ ধর্মের অপমান করি ফেরে,

পিতার নামেতে হানে তাঁর সন্তানে,

আচার লইয়া বিচার নাহিকো জানে,

পূজাগৃহে তোলে রক্তমাখানো ধ্বজা, --

দেবতার নামে এ যে শয়তান ভজা।

অনেক যুগের লজ্জা ও লাঞ্ছনা,

বর্বরতার বিকারবিড়ম্বনা

ধর্মের মাঝে আশ্রয় দিল যারা

আবর্জনায় রচে তারা নিজ কারা। --

প্রলয়ের ওই শুনি শৃঙ্গধ্বনি,

মহাকাল আসে লয়ে সম্মার্জনী।

যে দেবে মুক্তি তারে খুঁটিরূপে গাড়া,

যে মিলাবে তারে করিল ভেদের খাঁড়া,

যে আনিবে প্রেম অমৃত-উৎস হতে

তারি নামে ধরা ভাসায় বিষের স্রোতে,

তরী ফুটা করি পার হতে গিয়ে ডোবে --

তবু এরা কারে অপবাদ দেয় ক্ষোভে।

হে ধর্মরাজ, ধর্মবিকার নাশি

ধর্মমূঢ়জনেরে বাঁচাও আসি।

যে পূজার বেদি রক্তে গিয়েছে ভেসে

ভাঙো ভাঙো, আজি ভাঙো তারে নিঃশেষে --

ধর্মকারার প্রাচীরে বজ্র হানো,

এ অভাগা দেশে জ্ঞানের আলোক আনো।