না জানি কারে দেখিয়াছি,

দেখেছি কার মুখ।

প্রভাতে আজ পেয়েছি তার চিঠি।

পেয়েছি তাই সুখে আছি,

পেয়েছি এই সুখ--

কারেও আমি দেখাব নাকো সেটি।

লিখন আমি নাহিকো জানি--

বুঝি না কী যে রয়েছে বাণী--

যা আছে থাক্‌ আমার থাক্‌ তাহা।

পেয়েছি এই সুখে আজি

পবনে উঠে বাঁশরি বাজি,

পেয়েছি সুখে পরান গাহে "আহা'।

পণ্ডিত সে কোথা আছে,

শুনেছি নাকি তিনি

পড়িয়া দেন লিখন নানামতো।

যাব না আমি তাঁর কাছে,

তাঁহারে নাহি চিনি,

থাকুন লয়ে পুরানো পুঁথি যত।

শুনিয়া কথা পাব না দিশে,

বুঝেন কিনা বুঝিব কিসে,

ধন্দ লয়ে পড়িব মহা গোলে।

তাহার চেয়ে এ লিপিখানি

মাথায় কভু রাখিব আনি

যতনে কভু তুলিব ধরি কোলে।

রজনী যবে আঁধারিয়া

আসিবে চারি ধারে,

গগনে যবে উঠিবে গ্রহতারা;

ধরিব লিপি প্রসারিয়া

বসিয়া গৃহদ্বারে--

পুলকে রব হয়ে পলকহারা

তখন নদী চলিবে বাহি

যা আছে লেখা তাহাই গাহি,

লিপির গান গাবে বনের পাতা--

আকাশ হতে সপ্তঋষি

গাহিবে ভেদি গহন নিশি

গভীর তানে গোপন এই গাথা।

বুঝি না-বুঝি ক্ষতি কিবা,

রব অবোধসম।

পেয়েছি যাহা কে লবে তাহা কাড়ি।

রয়েছে যাহা নিশিদিবা

রহিবে তাহা মম,

বুকের ধন যাবে না বুক ছাড়ি।

খুঁজিতে গিয়া বৃথাই খুঁজি,

বুঝিতে গিয়া ভুল যে বুঝি,

ঘুরিতে গিয়া কাছেরে করি দূর।

না-বোঝা মোর লিখনখানি

প্রাণের বোঝা ফেলিল টানি,

সকল গানে লাগায়ে দিল সুর।