ভাঙা অতিথশালা।

ফাটা ভিতে অশথ-বটে

মেলেছে ডালপালা।

প্রখর রোদে তপ্ত পথে

কেটেছে দিন কোনোমতে,

মনে ছিল সন্ধ্যাবেলায়

মিলবে হেথা ঠাঁই--

মাঠের 'পরে আঁধার নামে,

হাটের লোকে ফিরল গ্রামে,

হেথায় এসে চেয়ে দেখি

নাই যে কেহ নাই।

কত কালে কত লোকে

কত দিনের শেষে

ধুয়েছিল পথের ধুলা

এইখানেতে এসে।

বসেছিল জ্যোৎস্নারাতে

স্নিগ্ধ শীতল আঙিনাতে,

কয়েছিল সবাই মিলে

নানা দেশের কথা।

প্রভাত হলে পাখির গানে

জেগেছিল নূতন প্রাণে,

দুলেছিল ফুলের ভারে

পথের তরুলতা।

আমি যেদিন এলেম সেদিন

দীপ জ্বলে না ঘরে,

বহু দিনের শিখার কালি

আঁকা ভিতের 'পরে।

শুষ্কজলা দিঘির পাড়ে

জোনাক ফিরে ঝোপে ঝাড়ে,

ভাঙা পথে বাঁশের শাখা

ফেলে ভয়ের ছায়া--

আমার দিনের যাত্রা-শেষে

কার অতিথি হলেম এসে!

হায় রে বিজন দীর্ঘ রাত্রি!

হায় রে ক্লান্ত কায়া!