যাবার সময় হলে জীবনের সব কথা সেরে

শেষবাক্যে জয়ধ্বনি দিয়ে যাব মোর অদৃষ্টেরে।

বলে যাব, পরমক্ষণের আশীর্বাদ

বারবার আনিয়াছে বিস্ময়ের অপূর্ব আস্বাদ।

যাহা রুগ্ন, যাহা ভগ্ন, যাহা মগ্ন পঙ্কস্তরতলে

আত্মপ্রবঞ্চনাছলে

তাহারে করি না অস্বীকার।

বলি, বারবার

পতন হয়েছে যাত্রাপথে

ভগ্ন মনোরথে;

বারে বারে পাপ

ললাটে লেপিয়া গেছে কলঙ্কের ছাপ;

বারবার আত্মপরাভব কত

দিয়ে গেছে মেরুদণ্ড করি নত;

কদর্যের আক্রমণ ফিরে ফিরে

দিগন্ত গ্লানিতে দিল ঘিরে।

মানুষের অসম্মান দুর্বিষহ দুখে

উঠেছে পুঞ্জিত হয়ে চোখের সম্মুখে,

ছুটি নি করিতে প্রতিকার--

চিরলগ্ন আছে প্রাণে ধিক্কার তাহার।

অপূর্ণ শক্তির এই বিকৃতির সহস্র লক্ষণ

দেখিয়াছি চারি দিকে সারাক্ষণ,

চিরন্তন মানবের মহিমারে তবু

উপহাস করি নাই কভু।

প্রত্যক্ষ দেখেছি যথা

দৃষ্টির সম্মুখে মোর হিমাদ্রিরাজের সমগ্রতা,

গুহাগহ্বরের যত ভাঙাচোরা রেখাগুলো তারে

পারে নি বিদ্রূপ করিবারে--

যত-কিছু খণ্ড নিয়ে অখণ্ডেরে দেখেছি তেমনি,

জীবনের শেষবাক্যে আজি তারে দিব জয়ধ্বনি।