যে ছিল মোর ছেলেমানুষ

হারিয়ে গেল কোথা--

পথ ভুলে সে পেরিয়েছিল

মরা নদীর সোঁতা।

হায়, বুড়োমির পাঁচিল তারে

আড়াল করল আজ--

জানি নে কোন্‌ লুকিয়ে-ফেরা

বয়স-চোরার কাজ।

হঠাৎ তোমার জন্মদিনের

আঘাত লাগল দ্বারে,

ডাক দিল সে দূর সেকালের

খ্যাপা বালকটারে।

ছেলেমানুষ আমি

ডাক শুনে সে এগিয়ে এসে

হঠাৎ গেল থামি।

বললে, শোনো ওগো কিশোরিকা,

"রবীন্দ্র' নাম কুষ্ঠিতে যার লিখা,

নামটা সত্য--সত্য শুধু

তারিখটা মাত্তর--

তাই বলে তো বয়সখানা

নয়কো ছিয়াত্তর।

কাঁচা প্রাণের দৃষ্টি যে তার,

জগৎটা তার কাঁচা।

বাঁধে নি তায় খেতাব-লাভের

বিষয়-লোভের খাঁচা।

মনটাতে তার সবুজ রঙে

সোনার বরন মেশা।

বক্ষে রসের তরঙ্গ তার,

চক্ষে রূপের নেশা।

ফাগুন-দিনের হাওয়ার খ্যাপামি যে

পরানে তার স্বপন বোনে

রঙিন মায়ার বীজে।

ভরসা যদি মেলে

তোমার লীলার আঙিনাতে

ফিরবে হেসে খেলে।

এই ভুবনের ভোর-বেলাকার গান

পূর্ণ করে রেখেছে তার প্রাণ।

সেই গানেরই সুর

তোমার নবীন জীবনখানি

করবে সুমধুর।