সহসা তুমি করেছ ভুল গানে,

বেধেছে লয় তানে,

স্খলিত পদে হয়েছে তাল ভাঙা--

শরমে তাই মলিন মুখ নত,

দাঁড়ালে থতোমতো,

তাপিত দুটি কপোল হল রাঙা।

নয়নকোণ করিছে ছলোছলো,

শুধালে তবু কথা কিছু না বলো,

অধর থরোথরো,

আবেগভরে বুকের 'পরে মালাটি চেপে ধরো।

অবমানিতা, জান না তুমি নিজে

মাধুরী এল কী যে

বেদনাভরা ত্রুটির মাঝখানে।

নিঁখুত শোভা নিরতিশয় তেজে

অপরাজেয় সে যে

পূর্ণ নিজে নিজেরই সম্মানে।

একটুখানি দোষের ফাঁক দিয়ে

হৃদয়ে আজি নিয়ে এসেছ, প্রিয়ে,

করুণ পরিচয়--

শরৎপ্রাতে আলোর সাথে ছায়ার পরিণয়।

তৃষিত হয়ে ওইটুকুরই লাগি

আছিল মন জাগি,

বুঝিতে তাহা পারি নি এতদিন।

গৌরবের গিরিশিখর-'পরে

ছিলে যে সমাদরে

তুষারসম শুভ্র সুকঠিন।

নামিলে নিয়ে অশ্রুজলধারা

ধূসর ম্লান আপন-মান-হারা

আমারও ক্ষমা চাহি--

তখনই জানি আমারই তুমি, নাহি গো দ্বিধা নাহি।

এখন আমি পেয়েছি অধিকার

তোমার বেদনার

অংশ নিতে আমার বেদনার।

আজিকে সব ব্যাঘাত টুটে

জীবনে মোর উঠিল ফুটে

শরম তব পরম করুণায়।

অকুণ্ঠিত দিনের আলো

টেনেছে মুখে ঘোমটা কালো;

আমার সাধনাতে

এল তোমার প্রদোষবেলা সাঁঝের তারা হাতে।