সিংহলে সেই দেখেছিলেম ক্যান্ডিদলের নাচ;

শিকড়গুলোর শিকড় ছিঁড়ে যেন শালের গাছ

পেরিয়ে এল মুক্তিমাতাল খ্যাপা,

হুংকার তার ছুটল আকাশ-ব্যাপা।

ডালপালা সব দুড়্‌দাড়িয়ে ঘূর্ণি হাওয়ায় কহে--

নহে, নহে, নহে--

নহে বাধা, নহে বাঁধন, নহে পিছন-ফেরা,

নহে আবেগ স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা,

নহে মৃদু লতার দোলা, নহে পাতার কাঁপন--

আগুন হয়ে জ্বলে ওঠা এ যে তপের তাপন।

ওদের ডেকে বলেছিল সমুদ্দরের ঢেউ,

"আমার ছন্দ রক্তে আছে এমন আছে কেউ।'

ঝঞ্ঝা ওদের বলেছিল, "মঞ্জীর তোর আছে

ঝংকারে যার লাগাবে লয় আমার প্রলয়নাচে।'

ঐ যে পাগল দেহখানা, শূন্যে ওঠে বাহু,

যেন কোথায় হাঁ করেছে রাহু--

লুব্ধ তাহার ক্ষুধার থেকে চাঁদকে করবে ত্রাণ,

পূর্ণিমাকে ফিরিয়ে দেবে প্রাণ।

মহাদেবের তপোভঙ্গে যেন বিষম বেগে

নন্দী উঠল জেগে;

শিবের ক্রোধের সঙ্গে

উঠল জ্বলে দুর্দাম তার প্রতি অঙ্গে অঙ্গে

নাচের বহ্নিশিখা

নিদয়া নির্ভীকা।

খুঁজতে ছোটে মোহমদের বাহন কোথায় আছে

দাহন করবে এই নিদারুণ আনন্দময় নাচে।

নটরাজ যে পুরুষ তিনি, তাণ্ডবে তাঁর সাধন,

আপন শক্তি মুক্ত ক'রে ছেঁড়েন আপন বাঁধন;

দুঃখবেগে জাগিয়ে তোলেন সকল ভয়ের ভয়;

জয়ের নৃত্যে আপনাকে তাঁর জয়।