সে যেন গ্রামের নদী

বহে নিরবধি

মৃদুমন্দ কলকলে;

তরঙ্গের ভঙ্গি নাই, আবর্তের ঘূর্ণি নাই জলে;

নুয়ে-পড়া তটতরু ঘনচ্ছায়া-ঘেরে

ছোটো করে রাখে আকাশেরে।

জগৎ সামান্য তার, তারি ধূলি-'পরে

বনফুল ফোটে অগোচরে,

মধু তার নিজ মূল্য নাহি জানে,

মধুকর তারে না বাখানে।

গৃহকোণে ছোটো দীপ জ্বালায় নেবায়,

দিন কাটে সহজ সেবায়।

স্নান সাঙ্গ করি এলোচুলে

অপরাজিতার ফুলে

প্রভাতে নীরব নিবেদনে

স্তব করে একমনে।

মধ্যদিনে বাতায়নতলে

চেয়ে দেখে নিম্নে দিঘিজলে

শৈবালের ঘন স্তর,

পতঙ্গের খেলা তারি 'পর।

আবছায়া কল্পনায়

ভাষাহীন ভাবনায়

মন তার ভরে

মধ্যাহ্নের অব্যক্ত মর্মরে।

সায়াহ্নের শান্তিখানি নিয়ে ঘোমটায়

নদীপথে যায়

ঘট-কাঁখে

বেণুবীথিকার বাঁকে বাঁকে

ধীর পায়ে চলি--

নাম কি শামলী।