এবার যে ওই এল সর্বনেশে গো।

বেদনায় যে বান ডেকেছে

রোদনে যায় ভেসে গো।

রক্ত-মেঘে ঝিলিক মারে,

বজ্র বাজে গহন-পারে,

কোন্‌ পাগোল ওই বারে বারে

উঠছে অট্টহেসে গো।

এবার যে ওই এল সর্বনেশে গো।

জীবন এবার মাতাল মরণ-বিহারে।

এইবেলা নে বরণ ক'রে

সব দিয়ে তোর ইহারে।

চাহিস নে আর আগুপিছু,

রাখিস নে তুই লুকিয়ে কিছু,

চরণে কর্‌ মাথা নিচু

সিক্ত আকুল কেশে গো।

এবার যে ওই এল সর্বনেশে গো।

পথটাকে আজ আপন করে নিয়ো রে।

গৃহ আঁধার হল, প্রদীপ

নিবল শয়ন-শিয়রে।

ঝড় এসে তোর ঘর ভরেছে,

এবার যে তোর ভিত নড়েছে,

শুনিস নি কি ডাক পড়েছে

নিরুদ্দেশের দেশে গো।

এবার যে ওই এল সর্বনেশে গো।

ছি ছি রে ওই চোখের জল আর ফেলিস নে।

ঢাকিস নে মুখ ভয়ে ভয়ে

কোণে আঁচল মেলিস নে।

কিসের তরে চিত্ত বিকল,

ভাঙুক না তোর দ্বারের শিকল,

বাহিরপানে ছোট্‌ না, সকল

দুঃখসুখের শেষে গো।

এবার যে ওই এল সর্বনেশে গো।

কণ্ঠে কি তোর জয়ধ্বনি ফুটবে না।

চরণে তোর রুদ্র তালে

নূপুর বেজে উঠবে না?

এই লীলা তোর কপালে যে

লেখা ছিল-- সকল ত্যেজে

রক্তবাসে আয় রে সেজে

আয় না বধূর বেশে গো।

ওই বুঝি তোর এল সর্বনেশে গো।