অরণ্যে কালীপ্রতিমা

বাল্মীকি স্তবে আসীন

অরণ্যে কালীপ্রতিমা

বাল্মীকি স্তবে আসীন

বাল্মীকি।

রাঙাপদপদ্মযুগে প্রণমি গো ভবদারা !

আজি এ ঘোর নিশীথে পূজিব তোমারে তারা।

সুরনর থরহর– ব্রহ্মাণ্ডবিপ্লব করো ,

রণরঙ্গে মাতো , মা গো , ঘোরা উন্মাদিনী - পারা।

ঝলসিয়ে দিশি দিশি ঘুরাও তরিত - অসি ,

ছুটাও শোণিতস্রোত , ভাসাও বিপুল ধরা।

উরো কালী কপালিনী , মহাকালসীমন্তিনী ,

লহো জবাপুষ্পাঞ্জলি মহাদেবী পরাৎপরা।।

বালিকাকে লইয়া দস্যুগণের প্রবেশ

বালিকাকে লইয়া দস্যুগণের প্রবেশ

দস্যুগণ।

দেখো হে ঠাকুর , বলি এনেছি মোরা।

বড়ো সরেস পেয়েছি বলি সরেস–

এমন সরেস মছলি , রাজা , জালে না পড়ে ধরা।

দেরি কেন ঠাকুর , সেরে ফেলো ত্বরা।।

বাল্মীকি।

নিয়ে আয় কৃপাণ। রয়েছে তৃষিতা শ্যামা মা ,

শোণিত পিয়াও– যা ত্বরায়।

লোল জিহ্বা লকলকে , তড়িত খেলে চোখে ,

করিয়ে খণ্ড দিক দিগন্ত ঘোর দন্ত ভায়।।

বালিকা।

কী দোষে বাঁধিলে আমায় , আনিলে কোথায়।

পথহারা একাকিনী বনে অসহায়–

রাখো রাখো রাখো , বাঁচাও আমায়।

দয়া করো অনাথারে– কে আমার আছে–

বন্ধনে কাতরতনু মরি যে ব্যথায়।

নেপথ্যে বনদেবী।

দয়া করো অনাথারে দয় করো গো–

বন্ধনে কাতর তনু জর্জর ব্যথায়।।

বাল্মীকি।

এ কেমন হল মন আমার !

কী ভাব এ যে কিছুই বুঝিতে যে পারি নে।

পাষাণহৃদয় গলিল কেন রে !

কেন আজি আঁখিজল দেখা দিল নয়নে !

কী মায়া এ জানে গো ,

পাষাণের বাঁধ এ যে টুটিল ,

সব ভেসে গেল গো , সব ভেসে গেল গো–

মরুভূমি ডুবে গেল করুণার প্লাবনে।।

প্রথম দস্যু।

আরে , কী এত ভাবনা কিছু তো বুঝি না।

দ্বিতীয় দস্যু।

সময় বহে যায় যে।

তৃতীয় দস্যু।

কখন্‌ এনেছি মোরা , এখনো তো হল না।

চতুর্থ দস্যু।

এ কেমন রীতি তব বাহ্‌ রে।

বাল্মীকি।

না না হবে না , এ বলি হবে না–

অন্য বলির তরে যা রে যা।

প্রথম দস্যু।

অন্য বলি এ রাতে কোথা মোরা পাব !

দ্বিতীয় দস্যু।

এ কেমন কথা কও , বাহ্‌ রে।।

বাল্মীকি।

শোন্‌ তোরা শোন্‌ এ আদেশ ,

কৃপাণ খর্পর ফেলে দে দে।

বাঁধন কর ছিন্ন ,

মুক্ত কর এখনি রে।।

যথাদিষ্ট কৃত

যথাদিষ্ট কৃত
1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7