বাল্মীকি।

কোথা লুকাইলে?

সব আশা নিবিল, দশদিশি অন্ধকার,

সবে গেছে চলে ত্যেজিয়ে আমারে,

তুমিও কি তেয়াগিলে।

লক্ষ্মীর আবির্ভাব

লক্ষ্মীর আবির্ভাব

লক্ষ্মী।

কেন গো আপন মনে ভ্রমিছ বনে বনে,সলিল দু-নয়নে

কিসের দুখে?

কমলা দিতেছি আসি,রতন রাশি রাশি,ফুটুক তবে হাসি

মলিন মুখে।

কমলা যারে চায়,বলো সে কী না পায়,দুখের এ ধরায়

থাকে সে সুখে।

ত্যেজিয়া কমলাসনে,এসেছি ঘোর বনে, আমারে শুভক্ষণে

হেরো গো চোখে।

বাল্মীকি।

কোথায় সে উষাময়ী প্রতিমা।

তুমি তো নহ সে দেবী, কমলাসনা,

ক'রো না আমারে ছলনা।

কী এনেছ ধন মান, তাহা যে চাহে না প্রাণ।

দেবী গো,চাহি না চাহি না,মণিময় ধূলিরাশি চাহি না,

তাহা লয়ে সুখী যারা হয় হোক,হয় হোক--

আমি,দেবী,সে সুখ চাহি না।

যাও লক্ষ্মী অলকায়,যাও লক্ষ্মী অমরায়,

এ বনে এসো না এসো না,

এসো না এ দীনজন-কুটিরে।

যে বীণা শুনেছি কানে,মন প্রাণ আছে ভোর,

আর কিছু চাহি না চাহি না।

[ লক্ষ্মীর অন্তর্ধান,বাল্মীকির প্রস্থান

[ লক্ষ্মীর অন্তর্ধান,বাল্মীকির প্রস্থান

বনদেবীগণের প্রবেশ

বনদেবীগণের প্রবেশ

বাণী বীণাপাণি,করুণাময়ী!

অন্ধজনে নয়ন দিয়ে অন্ধকারে ফেলিলে,

দরশ দিয়ে লুকালে কোথা দেবী অয়ি।

স্বপন সম মিলাবে যদি কেন গো দিলে চেতনা,

চকিতে শুধু দেখা দিয়ে চির মরম-বেদনা,

তোমারে চাহি ফিরিছে, হেরো কাননে কাননে ওই।

[ বনদেবীগণের প্রস্থান

[ বনদেবীগণের প্রস্থান

বাল্মীকির প্রবেশ

বাল্মীকির প্রবেশ

সরস্বতীর আবির্ভাব

সরস্বতীর আবির্ভাব

বাল্মীকি।

এই যে হেরি গো দেবী আমারি!

সব কবিতাময় জগত-চরাচর,

সব শোভাময় নেহারি।

ছন্দে উঠিছে চন্দ্রমা, ছন্দে কনক-রবি উদিছে,

ছন্দে জগ-মণ্ডল চলিছে,

জ্বলন্ত কবিতা তারকা সবে;

এ কবিতার মাঝারে তুমি কে গো দেবী,

আলোকে আলো আঁধারি।

আজি মলয় আকুল,বনে বনে এ কী গীত গাহিছে,

ফুল কহিছে প্রাণের কাহিনী,

নব রাগ-রাগিণী উছাসিছে,

এ আনন্দে আজ গীত গাহে মোর হৃদয় সব অবারি।

তুমিই কি দেবী ভারতী,কৃপাগুণে অন্ধ আঁখি ফুটালে,

উষা আনিলে প্রাণের আঁধারে,

প্রকৃতির রাগিণী শিখাইলে!

তুমি ধন্য গো,

রব চিরকাল চরণ ধরি তোমারি।

সরস্বতী।
1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7