কর্ণফুলির তীর

তরুতলে জ্যোৎস্নার ক্ষীণালোকে

কর্ণফুলির তীর

তরুতলে জ্যোৎস্নার ক্ষীণালোকে

যুবরাজ।

ওরে, সরিয়ে দে রে, একটু সরিয়ে দে। গাছের ডালগুলো একটু সরিয়ে দে, আজ আকাশের চাঁদকে একটু দেখে নিই। কেউ নেই! এ কি গাছেরই ছায়া! না আমার চোখের উপরে ছায়া পড়ে আসছে! এখনো কর্ণফুলির স্রোতের শব্দ তো শুনতে পাচ্ছি! এই শব্দটিতেই কি পৃথিবীর শেষ বিদায়সম্ভাষণ শুনব! ইন্দ্রকুমার! ভাই ইন্দ্রকুমার! এখনো তোমার রাগ গেল না!

ইন্দ্রকুমারের প্রবেশ

ইন্দ্রকুমারের প্রবেশ

ইন্দ্রকুমার।

দাদা! দাদা!

যুবরাজ।

আঃ, বাঁচলুম ভাই! তুমি আসবে জেনেই এত দেরি করেই বেঁচে ছিলুম। তুমি অভিমান করে গিয়েছিলে বলেই আমি যেতে পাচ্ছিলুম না। কিন্তু, অনেক রাত হয়ে গেছে ভাই, এবার তবে ঘুমোই, মা কোল পেতেছেন।

ইন্দ্রকুমার।

দাদা! মার্জনা করলে কি?

যুবরাজ।

সমস্তই, সমস্তই! এখানকার যা-কিছু ছিল এই রক্ত দিয়ে মার্জনা করে গেলুম। কিছুই বাকি রাখি নি। কেবল একটি দুঃখ রইল, মহারাজের কাছে খবর পাঠাতে হবে আমার পরাজয় হয়েছে।

ইন্দ্রকুমার।

পরাজয় তোমার হয় নি দাদা, আমারই পরাজয় হয়েছে।

সৈনিকের প্রবেশ

সৈনিকের প্রবেশ

সৈনিক।

কুমার রাজধর যুবরাজের পদধূলি নেবার জন্যে প্রার্থনা জানিয়ে পাঠিয়েছেন।

ইন্দ্রকুমার।

কখনো না! কিছুতেই না!

যুবরাজ।

ডাকো, ডাকো তাকে, ডাকো!

ইন্দ্রকুমার।

(রাগিয়া) দাদা-- রাজধরকে--

যুবরাজ।

আবার ভাই! আবার!

ইন্দ্রকুমার।

না, না, না, আর নয়। আমার আর রাগ নেই।

রাজধরের প্রবেশ ও প্রণাম

রাজধরের প্রবেশ ও প্রণাম

রাজধর।

আমি নরাধম। এ মুকুট তোমার পায়ে রাখলুম। এ তোমারই।

যুবরাজ।

আমার সময় নেই। ইন্দ্রকুমারকে দাও ভাই।

রাজধর।

দাদার আদেশ মাথায় করলেম। এ মুকুট তুমি নাও।

ইন্দ্রকুমার।

আমি পরাজিত, এ মুকুট আমার নয়। এ আমি তোমাকেই পরিয়ে দিলুম।-- দাদা!
1 | 2 | 3 | 4