পথিক রমণী

পথিক রমণী

[প্রস্থান

[প্রস্থান

বজ্রসেন।

ক্ষমিতে পারিলাম না যে

ক্ষমো হে মম দীনতা--

পাপীজনশরণ প্রভু।

মরিছে তাপে মরিছে লাজে

প্রেমের বলহীনতা,

ক্ষমো হে মম দীনতা।

প্রিয়ারে নিতে পারি নি বুকে, প্রেমেরে আমি হেনেছি,

পাপীরে দিতে শাস্তি শুধু পাপেরে ডেকে এনেছি,

জানি গো তুমি ক্ষমিবে তারে

যে অভাগিনী পাপের ভারে

চরণে তব বিনতা,

ক্ষমিবে না, ক্ষমিবে না

আমার ক্ষমাহীনতা॥

এসো এসো এসো প্রিয়ে

মরণলোক হতে নূতন প্রাণ নিয়ে।

নিষ্ফল মম জীবন,

নীরস মম ভুবন

শূন্য হৃদয় পূরণ করো মাধুরীসুধা দিয়ে॥

নূপুর কুড়াইয়া লইয়া।

নূপুর কুড়াইয়া লইয়া।

শ্যামার প্রবেশ

শ্যামার প্রবেশ

শ্যামা।

এসেছি প্রিয়তম।

ক্ষমো মোরে ক্ষমো।

গেল না, গেল না কেন কঠিন পরান মম

তব নিঠুর করুণ করে।

বজ্রসেন।

কেন এলি, কেন এলি, কেন এলি ফিরে--

যাও যাও চলে যাও।

[ শ্যামার প্রণাম ও প্রস্থান

[ শ্যামার প্রণাম ও প্রস্থান

বজ্রসেন।

ধিক্‌ ধিক্‌ ওরে মুগ্ধ,

কেন চাস্‌ ফিরে ফিরে।

এ যে দূষিত নিষ্ঠুর স্বপ্ন

এ যে মোহবাষ্পঘন কুজ্ঝটিকা,

দীর্ণ করিবি না কি রে।

অশুচি প্রেমের উচ্ছিষ্টে

নিদারুণ বিষ,

লোভ না রাখিস

প্রেতবাস তোর ভগ্ন মন্দিরে॥

নির্মম বিচ্ছেদসাধনায়

পাপ ক্ষালন হোক,

না করো মিথ্যা শোক,

দুঃখের তপস্বী রে,

স্মৃতিশৃঙ্খল করো ছিন্ন,

আয় বাহিরে

আয় বাহিরে॥

নেপথ্যে।

কঠিন বেদনার তাপস দোঁহে,

যাও চিরবিরহের সাধনায়,

ফিরো না, ফিরো না, ভুলো না মোহে।

গভীর বিষাদের শান্তি পাও হৃদয়ে,

জয়ী হও অন্তর বিদ্রোহে॥

যাক পিয়াসা, ঘুচুক দুরাশা,

যাক মিলায়ে কামনা-কুয়াশা।

স্বপ্ন-আবেশবিহীন পথে

যাও বাঁধন-হারা,

তাপবিহীন মধুর স্মৃতি নীরবে ব'হে॥
1 | 2