"ওগো পথিক দিনের শেষে

যাত্রা তোমার সে কোন্‌ দেশে,

এ পথ গেছে কোন্‌খানে?"

"কে জানে ভাই, কে জানে।

চন্দ্রসূর্য-গ্রহতারার

আলোক দিয়ে প্রাচীর-ঘেরা

আছে যে এক নিকুঞ্জবন নিভৃতে,

চরাচরের হিয়ার কাছে

তারি গোপন দুয়ার আছে

সেইখানে ভাই, করব গমন নিশীথে।"

"ওগো পথিক, দিনের শেষে

চলেছ যে এমন বেশে

কে আছে বা সেইখানে?"

"কে জানে ভাই, কে জানে।

বুকের কাছে প্রাণের সেতার

গুঞ্জরি নাম কহে যে তার,

শুনেছিলাম জোৎস্নারাতের স্বপনে।

অপূর্ব তার চোখের চাওয়া,

অপূর্ব তার গায়ের হাওয়া,

অপূর্ব তার আসা-যাওয়া গোপনে।"

"ওগো পথিক, দিনের শেষে

চলেছ যে এমন হেসে,

কিসের বিলাস সেইখানে?"

"কে জানে ভাই, কে জানে।

জগৎজোড়া সেই সে ঘরে

কেবল দুটি মানুষ ধরে

আর সেখানে ঠাঁই নাহি তো কিছুরি;

সেথা মেঘের কোণে কোণে

কেবলি দেখি ক্ষণে ক্ষণে

একটি নাচে আনন্দময় বিজুরি।"

"ওগো পথিক, দিনের শেষে

চলেছ যে,কেই বা এসে,

পথ দেখাবে সেইখানে?"

"কে জানে গো, কে জানে।

শুনেছি সেই একটি বাণী

পথ দেখাবার মন্ত্রখানি,

লেখা আছে সকল আকাশ-মাঝে গো;

সে মন্ত্র এই প্রাণের পারে

অনাহত বীণার তারে

গভীর সুরে বাজে সকাল-সাঁঝে গো।"