ওগো সুন্দর চোর,

বিদ্যা তোমার কোন্‌ সন্ধ্যার

কনকচাঁপার ডোর!

কত বসন্ত চলি গেছে হায়,

কত কবি আজি কত গান গায়,

কোথা রাজবালা চিরশয্যায়--

ওগো সুন্দর চোর,

কোনো গানে আর ভাঙে না যে তার

অনন্ত ঘুমঘোর।

ওগো সুন্দর চোর,

কত কাল হল কবে সে প্রভাতে

তব প্রেমনিশি ভোর!

কবে নিবে গেছে নাহি তাহা লিখা

তোমার বাসরে দীপানলশিখা,

খসিয়া পড়েছে সোহাগলতিকা--

ওগো সুন্দর চোর,

শিথিল হয়েছে নবীন প্রেমের

বাহুপাশ সুকঠোর।

তবু সুন্দর চোর,

মৃত্যু হারায়ে কেঁদে কেঁদে ঘুরে

পঞ্চাশ শ্লোক তোর।

পঞ্চাশ বার ফিরিয়া ফিরিয়া

বিদ্যার নাম ঘিরিয়া ঘিরিয়া

তীব্র ব্যথায় মর্ম চিরিয়া

ওগো সুন্দর চোর,

যুগে যুগে তারা কাঁদিয়া মরিছে

মূঢ় আবেগে ভোর।

ওগো সুন্দর চোর,

অবোধ তাহারা, বধির তাহারা,

অন্ধ তাহারা ঘোর।

দেখে না শোনে না কে আসে কে যায়,

জানে না কিছুই কারে তারা চায়,

শুধু এক নাম এক সুরে গায়--

ওগো সুন্দর চোর,

না জেনে না বুঝে ব্যর্থ ব্যথায়

ফেলিছে নয়নলোর।

ওগো সুন্দর চোর,

এক সুরে বাঁধা পঞ্চাশ গাথা

শুনে মনে হয় মোর--

রাজভবনের গোপনে পালিত,

রাজবালিকার সোহাগে লালিত,

তব বুকে বসি শিখেছিল গীত

ওগো সুন্দর চোর,

পোষা শুক সারী মধুরকণ্ঠ

যেন পঞ্চাশ-জোড়।

ওগো সুন্দর চোর,

তোমারি রচিত সোনার ছন্দ-

পিঞ্জরে তারা ভোর।

দেখিতে পায় না কিছু চারি ধারে,

শুধু চিরনিশি গাহে বারে বারে

তোমাদের চির শয়নদুয়ারে--

ওগো সুন্দর চোর,

আজি তোমাদের দুজনের চোখে

অনন্ত ঘুমঘোর।