কোথা হতে পেলে তুমি অতি পুরাতন

এ যৌবন,

হে তরু প্রবীণ,

প্রতিদিন

জরাকে ঝরাও তুমি কী নিগূঢ় তেজে--

প্রতিদিন আসো তুমি সেজে

সদ্য জীবনের মহিমায়।

প্রাচীনের সমুদ্রসীমায়

নবীন প্রভাত তার অক্লান্ত কিরণে

তোমাতে জাগায় লীলা নিরন্তর শ্যামলে হিরণে।

দিনে দিনে পথিকের দল

ক্লিষ্টপদতল

তব ছায়াবীথি দিয়ে রাত্রি-পানে ধায় নিরুদ্দেশ;

আর তো ফেরে না তারা, যাত্রা করে শেষ।

তোমার নিশ্চল যাত্রা নব নব পল্লব-উদ্‌গমে,

ঋতুর গতির ভঙ্গে পুষ্পের উদ্যমে।

প্রাণের নির্ঝরলীলা স্তব্ধ রূপান্তরে

দিগন্তরে পুলকিত করে।

তপোবনবালকের মতো

আবৃত্তি করিছ তুমি ফিরে ফিরে অবিরত

সঞ্জীবন-সামমন্ত্র-গাথা।

তোমার পুরানো পাতা

মাটিরে করিছে প্রত্যর্পণ

মাটির যা মর্তধন;

মৃত্যুভার সঁপিছে মৃত্যুরে

মর্মরিত আনন্দের সুরে।

সেইক্ষণে নবকিশলয়

রবিকর হতে করে জয়

প্রচ্ছন্ন আলোক

অমর অশোক

সৃষ্টির প্রথম বাণী;

বায়ু হতে লয় টানি

চিরপ্রবাহিত

নৃত্যের অমৃত।