বিক্রমদেবের শিবির

বিক্রমদেব, যুধাজিৎ ও জয়সেন

বিক্রমদেবের শিবির

বিক্রমদেব, যুধাজিৎ ও জয়সেন

বিক্রমদেব।

পলাতক অরাতিরে আক্রমণ করা

নহে ক্ষাত্রধর্ম।

যুধাজিৎ।

পলাতক অপরাধী

সহজে নিষ্কৃতি পায় যদি, রাজদণ্ড

ব্যর্থ হয় তবে।

বিক্রমদেব।

বালক সে, শাস্তি তার

যথেষ্ট হয়েছে। পলায়ন, অপমান,

আর শাস্তি কিবা?

যুধাজিৎ।

গিরিরুদ্ধ কাশ্মীরের

বাহিরে পড়িয়া রবে যত অপমান।

সেথায় সে যুবরাজ, কে জানিবে তার

কলঙ্কের কথা।

জয়সেন।

চলো মহারাজ, চলো

সেই কাশ্মীরের মাঝে যাই,-- সেথা গিয়ে

দিয়ে আসি কলঙ্কের ছাপ।

বিক্রমদেব।

তাই চলো।

বাড়ে চিন্তা যত চিন্তা কর। কার্যস্রোতে

আপনারে ভাসাইয়া দিনু, দেখি কোথা

গিয়া পড়ি, কোথা পাই কূল।

প্রহরীর প্রবেশ

প্রহরীর প্রবেশ

প্রহরী।

মহারাজ,

এসেছে সাক্ষাৎ-তরে ব্রাহ্মণতনয়

দেবদত্ত

বিক্রমদেব।

দেবদত্ত? নিয়ে এস, নিয়ে

এস তারে। না, না, রোসো, থামো, ভেবে দেখি।

কী লাগিয়ে এসেছ ব্রাহ্মণ? জানি তারে

ভালোমতে। এসেছে সে যুদ্ধক্ষেত্র হতে

ফিরাতে আমারে। হায় বিপ্র, তোমরাই

ভাঙিয়াছ বাঁধ, এখন প্রবল স্রোত

শুধু কি শস্যের ক্ষেত্রে জলসেক করে

ফিরে যাবে তোমাদের আবশ্যক বুঝে

পোষমানা প্রাণীর মতন? চূর্ণিবে সে

লোকালয়, উচ্ছন্ন করিবে দেশগ্রাম।

সকম্পিত পরামর্শ উপদেশ নিয়ে

তোমরা চাহিয়া থাকো, আমি ধেয়ে চলি

কার্যবেগে, অবিশ্রাম গতিসুখে, মত্ত

মহানদী যে আনন্দে শিলারোধ ভেঙে

ছুটে চিরদিন। প্রচণ্ড আনন্দ-অন্ধ,

মুহূর্ত তাহার পরমায়ু; তারি মধ্যে

উৎপাটিয়া নিয়ে আসে অনন্তের সুখ

মত্ত করিশুণ্ডে ছিন্ন রক্তপদ্ম-সম।

বিচার বিবেক পরে হবে। চিরকাল

জড় সিংহাসনে পড়ি করিব মন্ত্রণা।

চাহি না করিতে দেখা ব্রাহ্মণের সনে।

জয়সেন।

যে আদেশ।

যুধাজিৎ।

( জনান্তিকে জয়সেনের প্রতি )

ব্রাহ্মণেরে জেনো শত্রু বলে।

বন্দী করে রাখো।

জয়সেন।

বিলক্ষণ জানি তারে।

২৮। ১। ৪০ শান্তিনিকেতন
1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6