একদল লোকের প্রবেশ
মন্দির
একদল লোকের প্রবেশ
নেপাল।
কোথায় হে, তোমাদের তিন-শো পাঁঠা, এক-শো-এক মোষ। একটা টিকটিকির ছেঁড়া নেজটুকু পর্যন্ত দেখবার জো নেই। বাজনাবাদ্যি গেল কোথায়, সব যে হাঁ-হাঁ করছে। খরচপত্র করে পুজো দেখতে এলুম, আচ্ছা শাস্তি হয়েছে!
গণেশ।
দেখ্, মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে অমন করে বলিস নে। মা পাঁঠা পায় নি, এবার জেগে উঠে তোদের এক-একটাকে ধরে ধরে মুখে পুরবে।
হারু।
কেন! গেল বছরে বাছারা সব ছিলে কোথায়? আর, সেই ও-বছর, যখন ব্রত সাঙ্গ করে রানীমা পুজো দিয়েছিল, তখন কি তোদের পায়ে কাঁটা ফুটেছিল? তখন একবার দেখে যেতে পার নি? রক্তে যে গোমতী রাঙা হয়ে গিয়েছিল। আর অলুক্ষুনে বেটারা এসেছিস, আর মায়ের খোরাক পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গেল। তোদের এক-একটাকে ধরে মা'র কাছে নিবেদন করে দিলে মনের খেদ মেটে।
কানু।
আর ভাই, মিছে রাগ করিস। আমাদের কি আর বলবার মুখ আছে! তা হলে কি আর দাঁড়িয়ে ওর কথা শুনি!
হারু।
তা যা বলিস ভাই, অপ্পেতেই আমার রাগ হয় সে কথা সত্যি। সেদিন ও ব্যক্তি শালা পর্যন্ত উঠেছিল, তার বেশি যদি একটা কথা বলত, কিম্বা আমার গায়ে হাত দিত, মাইরি বলছি, তা হলে আমি--
নেপাল।
তা, চল্-না দেখি, কার হাড়ে কত শক্তি আছে।
হারু।
তা, আয়-না, জানিস? এখানকার দফাদার আমার মামাতো ভাই হয়!
নেপাল।
তা, নিয়ে আয় তোর মামাকে সুদ্ধ নিয়ে আয়, তোর দফাদারের দফা নিকেশ করে দিই।
হারু।
তোমরা সকলেই শুনলে!
গণেশ ও কানু।
আর দূর কর্ ভাই, ঘরে চল্। আজ আর কিছুতে গা লাগছে না। এখন তোদের তামাশা তুলে রাখ্।
হারু।
এ কি তামাশা হল? আমার মামাকে নিয়ে তামাশা! আমাদের দফাদারের আপনার বাবাকে নিয়ে--
গণেশ ও কানু।
আর রেখে দে! তোর আপনার বাবা নিয়ে তুই আপনি মর্।
[ সকলের প্রস্থান
[ সকলের প্রস্থান
রঘুপতি নয়নরায় ও জয়সিংহের প্রবেশ
রঘুপতি নয়নরায় ও জয়সিংহের প্রবেশ
রঘুপতি।
মা'র 'পরে ভক্তি নাই তব?
নয়নরায়।
হেন কথা
কার সাধ্য বলে? ভক্তবংশে জন্ম মোর।
রঘুপতি।
সাধু, সাধু! তবে তুমি মায়ের সেবক,
আমাদেরই লোক।
নয়নরায়।
প্রভু, মাতৃভক্ত যাঁরা
আমি তাঁহাদেরই দাস।
রঘুপতি।
সাধু! ভক্তি তব
হউক অক্ষয়। ভক্তি তব বাহুমাঝে
করুক সঞ্চার অতি দুর্জয় শকতি।
ভক্তি তব তরবারি করুক শাণিত,
বজ্রসম দিক তাহে তেজ। ভক্তি তব
হৃদয়েতে করুক বসতি, পদমান
সকলের উচ্চে।
নয়নরায়।
ব্রাহ্মণের আশীর্বাদ
ব্যর্থ হইবে না।
রঘুপতি।
শুন তবে সেনাপতি,
তোমার সকল বল করো একত্রিত
মা'র কাজে। নাশ করো মাতৃবিদ্রোহীরে।
নয়নরায়।
যে আদেশ প্রভু! কে আছে মায়ের শত্রু?
রঘুপতি।
গোবিন্দমাণিক্য।
নয়নরায়।
আমাদের মহারাজ!
রঘুপতি।
লয়ে তব সৈন্যদল, অক্রমণ করো
তারে।
নয়নরায়।
ধিক্ পাপ-পরামর্শ! প্রভু, এ কি
পরীক্ষা আমারে?
রঘুপতি।
পরীক্ষাই বটে। কার
ভৃত্য তুমি। এবার পরীক্ষা হবে তার।
ছাড়ো চিন্তা, ছাড়ো দ্বিধা, কাল নাহি আর--
ত্রিপুরেশ্বরীর আজ্ঞা হতেছে ধ্বনিত
প্রলয়ের শৃঙ্গসম--ছিন্ন হয়ে গেছে
আজি সকল বন্ধন।
নয়নরায়।
নাই চিন্তা, নাই
কোনো দ্বিধা। যে পদে রেখেছে দেবী, আমি
তাহে রয়েছি অটল।
রঘুপতি।
সাধু!
নয়নরায়।
এত আমি
নরাধম জননীর সেবকের মাঝে
মোর 'পরে হেন আজ্ঞা! আমি হব
বিশ্বাসঘাতক! আপনি দাঁড়ায়ে আছে
বিশ্বমাতা হৃদয়ের বিশ্বাসের 'পরে,
সেই তাঁর অটল আসন--আপনি তা
ভাঙিতে বলিবে দেবী আপনার মুখে?
তাহা হলে আজ যাবে রাজা, কাল দেবী--
মনুষ্যত্ব ভেঙে পড়ে যাবে জীর্ণভিত্তি
অট্টালিকা-সম।
জয়সিংহ।
ধন্য, সেনাপতি ধন্য!
রঘুপতি।
ধন্য বটে তুমি। কিন্তু এ কী ভ্রান্তি তব!
যে রাজা বিশ্বাসঘাতী জননীর কাছে,
তার সাথে বিশ্বাসের বন্ধন কোথায়?
নয়নরায়।
কী হইবে মিছে তর্কে? বুদ্ধির বিপাকে
চাহি না পড়িতে। আমি জানি এক পথ
আছে--সেই পথ বিশ্বাসের পথ। সেই
সিধে পথ বেয়ে চিরদিন চলে যাবে
অবোধ অধম ভৃত্য এ নয়নরায়।
[ প্রস্থান
[ প্রস্থান
জয়সিংহ।
চিন্তা কেন দেব? এমনি বিশ্বাসবলে
মোরাও করিব কাজ। কারে ভয় প্রভু!
সৈন্যবলে কোন্ কাজ! অস্ত্র কোন্ ছার!
যার 'পরে রয়েছে যে ভার, বল তার
আছে সে কাজের। করিবই মা'র পূজা
যদি সত্য মায়ের সেবক হই মোরা।
চলো প্রভু, বাজাই মায়ের ডঙ্কা, ডেকে
আনি পুরবাসীগণে, মন্দিরের দ্বার
খুলে দিই!--ওরে, আয় তোরা, আয়, আয়,
অভয়ার পূজা হবে--নির্ভয়ে আয় রে
তোরা মায়ের সন্তান! আয় পুরবাসী!
[ জয়সিংহ ও রঘুপতির প্রস্থান
[ জয়সিংহ ও রঘুপতির প্রস্থান
পুরবাসীগণের প্রবেশ
পুরবাসীগণের প্রবেশ
অক্রূর।
ওরে, আয় রে আয়!
সকলে।
জয় মা!
হারু।
আয় রে, মায়ের সামনে বাহু তুলে নৃত্য করি।
গান
গান
উলঙ্গিনী নাচে রণরঙ্গে।
আমরা নৃত্য করি সঙ্গে।
দশ দিক আঁধার ক'রে মাতিল দিক্বসনা,
জ্বলে বহ্নিশিখা রাঙা-রসনা,
দেখে মরিবারে ধাইছে পতঙ্গে।
কালো কেশ উড়িল আকাশে,
রবি সোম লুকালো তরাসে।
রাঙা রক্তধারা ঝরে কালো অঙ্গে,
ত্রিভুবন কাঁপে ভুরুভঙ্গে।
সকলে।
জয় মা!
গণেশ।
আর ভয় নেই!
কানু।
ওরে, সেই দক্ষিণদ'র মানুষগুলো এখন গেল কোথায়?
গণেশ।
মায়ের ঐশ্বর্য বেটাদের সইল না। তারা ভেগেছে।
হারু।
কেবল মায়ের ঐশ্বর্য নয়, আমি তাদের এমনি শাসিয়ে দিয়েছি, তারা আর এমুখো হবে না। বুঝলে অক্রূরদা, আমার মামাতো ভাই দফাদারের নাম করবা-মাত্র তাদের মুখ চুন হয়ে গেল।
অক্রূর।
আমাদের নিতাই সেদিন তাদের খুব কড়া দুটো কথা শুনিয়ে দিয়েছিল। ওই যার সেই ছুঁচ-পারা মুখ সেই বেটা তেড়ে উত্তর দিতে এসেছিল; আমাদের নিতাই বললে, "ওরে, তোরা দক্ষিণদেশে থাকিস, তোরা উত্তরের কী জানিস? উত্তর দিতে এসেছিস, উত্তরের জানিস কী?" শুনে আমরা হেসে কে কার গায়ে পড়ি।
গণেশ।
ইদিকে ঐ ভালোমানুষটি, কিন্তু নিতাইয়ের সঙ্গে কথায় আঁটবার জো নেই।
হারু।
নিতাই আমার পিসে হয়।
কানু।
শোনো একবার কথা শোনো। নিতাই আবার তোর পিসে হল কবে?
হারু।
তোমরা আমার সকল কথাই ধরতে আরম্ভ করেছ। আচ্ছা, পিসে নয় তো পিসে নয়। তাতে তোমার সুখটা কী হল? আমার হল না বলে কি তোমারই পিসে হল?
রঘুপতি ও জয়সিংহের প্রবেশ
রঘুপতি ও জয়সিংহের প্রবেশ
রঘুপতি।
শুনলুম সৈন্য আসছে। জয়সিংহ অস্ত্র নিয়ে তুমি এইখানে দাঁড়াও। তোরা আয়, তোরা এইখানে দাঁড়া! মন্দিরের দ্বার আগলাতে হবে। আমি তোদের অস্ত্র এনে দিচ্ছি।
গণেশ।
অস্ত্র কেন ঠাকুর?
রঘুপতি।
মায়ের পুজো বন্ধ করবার জন্য রাজার সৈন্য আসছে।
হারু।
সৈন্য আসছে! প্রভু, তবে আমরা প্রণাম হই।
কানু।
আমরা ক'জনা, সৈন্য এলে কী করতে পারব?
হারু।
করতে সবই পারি--কিন্তু সৈন্য এলে এখেনে জায়গা হবে কোথায়? লড়াই তো পরের কথা, এখানে দাঁড়াব কোন্খানে?
অক্রূর।
তোর কথা রেখে দে। দেখছিস নে প্রভু রাগে কাঁপছেন? তা ঠাকুর, অনুমতি করেন তো আমাদের দলবল সমস্ত ডেকে নিয়ে আসি।
হারু।
সেই ভালো। অমনি আমার মামাতো ভাইকে ডেকে আনি। কিন্তু, আর একটুও বিলম্ব করা উচিত নয়।
[ সকলের প্রস্থানোদ্যম
[ সকলের প্রস্থানোদ্যম
সরোষে
সরোষে
রঘুপতি।
দাঁড়া তোরা!
করজোড়ে
করজোড়ে
জয়সিংহ।
যেতে দাও প্রভু--প্রাণভয়ে ভীত এরা
বুদ্ধিহীন, আগে হতে রয়েছে মরিয়া।
আমি আছি মায়ের সৈনিক। এক দেহে
সহস্র সৈন্যের বল। অস্ত্র থাক্ পড়ে।
ভীরুদের যেতে দাও।
স্বগত
স্বগত
রঘুপতি।
সে-কাল গিয়েছে।
অস্ত্র চাই, অস্ত্র চাই--শুধু ভক্তি নয়।
প্রকাশ্যে
প্রকাশ্যে
জয়সিংহ।
সৈন্য নহে প্রভু, আসিছে রানীর পূজা।
রানীর অনুচর ও পুরবাসীগণের প্রবেশ
রানীর অনুচর ও পুরবাসীগণের প্রবেশ
সকলে।
ওরে, ভয় নেই--সৈন্য কোথায়? মা'র পূজা আসছে।
হারু।
আমরা আছি খবর পেয়েছে, সৈন্যেরা শীঘ্র এ দিকে আসছে না।
কানু।
ঠাকুর, রানীমা, পুজো পাঠিয়েছেন।
রঘুপতি।
জয়সিংহ, শীঘ্র পূজার আয়োজন করো।
[ জয়সিংহের প্রস্থান
[ জয়সিংহের প্রস্থান
গোবিন্দমাণিক্য।
চলে যাও হেথা হতে--নিয়ে যাও বলি।
রঘুপতি, শোন নাই আদেশ আমার?
রঘুপতি।
শুনি নাই।
গোবিন্দমাণিক্য।
তবে তুমি এ রাজ্যের নহ।
রঘুপতি।
নহি আমি। আমি আছি যেথা, সেথা এলে
রাজদণ্ড খসে যায় রাজহস্ত হতে,
মুকুট ধুলায় পড়ে লুটে। কে আছিস,
আন্ মার পূজা।
বাদ্যোদ্যম
বাদ্যোদ্যম
গোবিন্দমাণিক্য।
চুপ কর্!
অনুচরের প্রতি
কোথা আছে
সেনাপতি, ডেকে আন্! হায় রঘুপতি,
অবশেষে সৈন্য দিয়ে ঘিরিতে হইল
ধর্ম! লজ্জা হয় ডাকিতে সৈনিকদল,
বাহুবল দুর্বলতা করায় স্মরণ।
রঘুপতি।
অবিশ্বাসী, সত্যই কি হয়েছে ধারণা
কলিযুগে ব্রহ্মতেজ গেছে--তাই এত
দুঃসাহস? যায় নাই। যে দীপ্ত অনল
জ্বলিছে অন্তরে, সে তোমার সিংহাসনে
নিশ্চয় লাগিবে। নতুবা এ মনানলে
ছাই করে পুড়াইব সব শাস্ত্র, সব
ব্রহ্মগর্ব, সমস্ত তেত্রিশ কোটি মিথ্যা।
আজ নহে মহারাজ, রাজ-অধিরাজ,
এই দিন মনে কোরো আর-এক দিন।
নয়নরায় ও চাঁদপালের প্রবেশ
নয়নরায় ও চাঁদপালের প্রবেশ
নয়নের প্রতি
নয়নের প্রতি
গোবিন্দমাণিক্য।
সৈন্য হয়ে থাকো হেথা নিষেধ করিতে
জীববলি।
নয়নরায়।
ক্ষমা করো অধম কিংকরে।
অক্ষম রাজার ভৃত্য দেবতামন্দিরে।
যতদূর যেতে পারে রাজার প্রতাপ
মোরা ছায়া সঙ্গে যাই।
চাঁদপাল।
থামো সেনাপতি,
দীপশিখা থাকে এক ঠাঁই, দীপালোক
যায় বহুদূরে। রাজ-ইচ্ছা যেথা যাবে
সেথা যাব মোরা।
গোবিন্দমাণিক্য।
সেনাপতি, মোর আজ্ঞা
তোমার বিচারাধীন নহে। ধর্মাধর্ম
লাভক্ষতি রহিল আমার, কার্য শুধু
তব হাতে।
নয়নরায়।
এ কথা হৃদয় নাহি মানে।
মহারাজ, ভৃত্য বটে, তবুও মানুষ
আমি। আছে বুদ্ধি, আছে ধর্ম, আছ প্রভু,
আছেন দেবতা।
গোবিন্দমাণিক্য।
তবে ফেলো অস্ত্র তব।
চাঁদপাল, তুমি হলে সেনাপতি, দুই
পদ রহিল তোমার। সাবধানে সৈন্য
লয়ে মন্দির করিব রক্ষা।
চাঁদপাল।
যে আদেশ
মহারাজ!
গোবিন্দমাণিক্য।
নয়ন, তোমার অস্ত্র দাও
চাঁদপালে।
নয়নরায়।
চাঁদপালে? কেন মহারাজ!
এ অস্ত্র তোমার পূর্ব রাজপিতামহ
দিয়েছেন আমাদের পিতামহে। ফিরে
নিতে চাও যদি, তুমি লও। স্বর্গে আছ
তোমরা হে পিতৃপিতামহ। সাক্ষী থাকো
এতদিন যে রাজবিশ্বাস পালিয়াছ
বহু যত্নে, সাগ্নিকের পুণ্য অগ্নি-সম,
যার ধন তারি হাতে ফিরে দিনু আজ
কলঙ্কবিহীন।
চাঁদপাল।
কথা আছে ভাই!
নয়নরায়।
ধিক্!
চুপ করো! মহারাজ, বিদায় হলেম।
[ প্রণামপূর্বক প্রস্থান
[ প্রণামপূর্বক প্রস্থান
গোবিন্দমাণিক্য।
ক্ষুদ্র স্নেহ নাই রাজকাজে। দেবতার
কার্যভার তুচ্ছ মানবের 'পরে, হায়
কী কঠিন!
রঘুপতি।
এমনি করিয়া ব্রহ্মশাপ
ফলে, বিশ্বাসী হৃদয় ক্রমে দূরে যায়,
ভেঙে যায় দাঁড়াবার স্থান।
জয়সিংহের প্রবেশ
জয়সিংহের প্রবেশ
জয়সিংহ।
আয়োজন
হয়েছে পূজার। প্রস্তুত রয়েছে বলি।
গোবিন্দমাণিক্য।
বলি কার তরে?
জয়সিংহ।
মহারাজ, তুমি হেথা!
তবে শোনো নিবেদন--একান্ত মিনতি
যুগল চরণতলে, প্রভু, ফিরে লও
তব গর্বিত আদেশ। মানব হইয়া
দাঁড়ায়ো না দেবীরে আচ্ছন্ন করি--
রঘুপতি।
ধিক্!
জয়সিংহ, ওঠো, ওঠো! চরণে পতিত
কার কাছে? আমি যার গুরু, এ সংসারে
এই পদতলে তার একমাত্র স্থান।
মূঢ়, ফিরে দেখ্--গুরুর চরণ ধরে
ক্ষমা ভিক্ষা কর্। রাজার আদেশ নিয়ে
করিব দেবীর পূজা, করালকালিকা,
এত কি হয়েছে তোর অধঃপাত! থাক্
পূজা, থাক্ বলি--দেখিব রাজার দর্প
কতদিন থাকে। চলে এস জয়সিংহ!
[ রঘুপতি ও জয়সিংহের প্রস্থান
[ রঘুপতি ও জয়সিংহের প্রস্থান
গোবিন্দমাণিক্য।
এ সংসারে বিনয় কোথায়? মহাদেবী,
যারা করে বিচরণ তব পদতলে
তারাও শেখে নি হায় কত ক্ষুদ্র তারা!
হরণ করিয়া লয়ে তোমার মহিমা
আপনার দেহে বহে, এত অহংকার!
[ প্রস্থান
[ প্রস্থান