মন্দির

নক্ষত্ররায় রঘুপতি ও নিদ্রিত ধ্রুব

মন্দির

নক্ষত্ররায় রঘুপতি ও নিদ্রিত ধ্রুব

রঘুপতি।

কেঁদে কেঁদে ঘুমিয়ে পড়েছে। জয়সিংহ

এসেছিল মোর কোলে অমনি শৈশবে

পিতৃমাতৃহীন। সেদিন অমনি করে

কেঁদেছিল নূতন দেখিয়া চারি দিক,

হতাশ্বাস শ্রান্ত শোকে অমনি করিয়া

ঘুমায়ে পড়িয়াছিল সন্ধ্যা হয়ে গেলে

ওইখানে দেবীর চরণে! ওরে দেখে

তার সেই শিশু-মুখ শিশুর ক্রন্দন

মনে পড়ে।

নক্ষত্ররায়।

ঠাকুর কোরো না দেরি আর--

ভয় হয় কখন সংবাদ পাবে রাজা।

রঘুপতি।

সংবাদ কেমন করে পাবে? চারি দিক

নিশীথের নিদ্রা দিয়ে ঘেরা।

নক্ষত্ররায়।

একবার

মনে হল যেন দেখিলাম কার ছায়া!

রঘুপতি।

আপন ভয়ের।

নক্ষত্ররায়।

শুনিলাম যেন কার

ক্রন্দনের স্বর!

রঘুপতি।

আপনার হৃদয়ের।

দূর হোক নিরানন্দ। এস পান করি

কারণসলিল।

মদ্যপান

মনোভাব যতক্ষণ

মনে থাকে, ততক্ষণ দেখায় বৃহৎ--

কার্যকালে ছোট হয়ে আসে, বহু বাষ্প

গলে গিয়ে একবিন্দু জল। কিছুই না,

শুধু মুহূর্তের কাজ। শুধু শীর্ণশিখা

প্রদীপ নিবাতে যতক্ষণ। ঘুম হতে

চকিতে মিলায়ে যাবে গাঢ়তর ঘুমে

ওই প্রাণরেখাটুকু--শ্রাবণনিশীথে

বিজুলিঝলক-সম, শুধু বজ্র তার

চিরদিন বিঁধে রবে রাজদম্ভ-মাঝে।

এস এস যুবরাজ, ম্লান হয়ে কেন

বসে আছে এক পাশে--মুখে কথা নেই,

হাসি নেই, নির্বাপিতপ্রায়! এস, পান

করি আনন্দসলিল।

নক্ষত্ররায়।

অনেক বিলম্ব

হয়ে গেছে। আমি বলি, আজ থাক্‌। কাল

পূজা হবে।

রঘুপতি।

বিলম্ব হয়েছে বটে। রাত্রি

শেষ হয়ে আসে।

নক্ষত্ররায়।

ওই শোনো পদধ্বনি।

রঘুপতি।

কই? নাহি শুনি।

নক্ষত্ররায়।

ওই শোনো, ওই দেখো

আলো।

রঘুপতি।

সংবাদ পেয়েছে রাজা! আর তবে

এক পল দেরি নয়। জয় মহাকালী!

খড়্গ-উত্তোলন

খড়্গ-উত্তোলন

গোবিন্দমাণিক্য ও প্রহরীগণের প্রবেশ

রাজার নির্দেশক্রমে প্রহরীর দ্বারা রঘুপতি ও নক্ষত্ররায় ধৃত হইল

গোবিন্দমাণিক্য ও প্রহরীগণের প্রবেশ

রাজার নির্দেশক্রমে প্রহরীর দ্বারা রঘুপতি ও নক্ষত্ররায় ধৃত হইল

গোবিন্দমাণিক্য।

নিয়ে যাও কারাগারে, বিচার হইবে।
1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7