কুঞ্জবনের দ্বারে

ঠাকুরদা ও উৎসববালকগণ

কুঞ্জবনের দ্বারে

ঠাকুরদা ও উৎসববালকগণ

ঠাকুরদা।

ওরে, দরজার কাছে এসেছি, এবার খুব কষে দরজায় ঘা লাগা।

গান

আজি কমলমুকুলদল খুলিল!

দুলিল রে দুলিল!

মানসসরসে রসপুলকে

পলকে পলকে ঢেউ তুলিল।

গগন মগন হল গন্ধে,

সমীরণ মূর্ছে আনন্দে,

গুন্‌ গুন্‌ গুঞ্জনছন্দে

মধুকর ঘিরি ঘিরি বন্দে--

নিখিলভুবনমন ভুলিল,

মন ভুলিল রে

মন ভুলিল॥

[ প্রস্থান

[ প্রস্থান

অবন্তী।

এখানকার রাজা কি আমাদেরও দেখা দেবে না।

কাঞ্চী।

এর রাজত্ব করবার প্রণালী কিরকম! রাজার বনে উৎসব, সেখানেও সাধারণ লোকের কারো কোনো বাধা নেই?

কোশল।

আমাদের জন্যে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র জায়গা তৈরি করে রাখা উচিত ছিল।

কাঞ্চী।

জোর করে নিজেরা তৈরি করে নেব।

কোশল।

এই-সব দেখেই সন্দেহ হয় এখানে রাজা নেই, একটা ফাঁকি চলে আসছে।

অবন্তী।

ওহে, তা হতে পারে। কিন্তু এখানকার মহিষী সুদর্শনা নিতান্ত ফাঁকি নয়।

কোশল।

সেই লোভেই তো এসেছি। যিনি দেখা দেন না তাঁর জন্যে আমার বিশেষ ঔৎসুক্য নেই, কিন্তু যিনি দেখবার যোগ্য তাঁকে না দেখে ফিরে গেলে ঠকতে হবে।

কাঞ্চী।

একটা ফন্দি দেখাই যাক-না।

অবন্তী।

ফন্দি জিনিসটা খুব ভালো, যদি তার মধ্যে নিজে আটকা না পড়া যায়।

কাঞ্চী।

এ কী ব্যাপার! নিশেন উড়িয়ে এ দিকে কে আসে! এ কোথাকার রাজা।

পদাতিকগণের প্রবেশ

পদাতিকগণের প্রবেশ

কাঞ্চী।

তোমাদের রাজা কোথাকার।

প্রথম পদাতিক।

এই দেশের। তিনি আজ উৎসব করতে বেরিয়েছেন।

[ প্রস্থান

[ প্রস্থান

কোশল।

একি কথা! এখানকার রাজা বেরিয়েছে!

অবন্তী।

তাই তো, তা হলে এঁকে দেখেই ফিরতে হবে-- অন্য দর্শনীয়টা রইল।

কাঞ্চী।

শোন কেন। এখানে রাজা নেই বলেই যে-খুশি নির্ভাবনায় আপনাকে রাজা বলে পরিচয় দেয়। দেখছ-না, যেন সেজে এসেছে--অত্যন্ত বেশি সাজ।

অবন্তী।

কিন্তু লোকটাকে দেখাচ্ছে ভালো, চোখ ভোলাবার মতো চেহারাটা আছে।

কাঞ্চী।

চোখ ভুলতে পারে, কিন্তু ভালো করে তাকালেই ভুল থাকে না। আমি তোমাদের সামনেই ওর ফাঁকি ধরে দিচ্ছি।

রাজবেশীর প্রবেশ

রাজবেশীর প্রবেশ

রাজবেশী।

রাজগণ, স্বাগত। এখানে তোমাদের অভ্যর্থনার কোনো ত্রুটি হয় নি তো?

রাজগণ।

(কপট বিনয়ে নমস্কার করিয়া) কিছু না।

কাঞ্চী।

যে অভাব ছিল তা মহারাজের দর্শনেই পূর্ণ হয়েছে।

রাজবেশী।

আমি সাধারণের দর্শনীয় নই, কিন্তু তোমরা আমার অনুগত এইজন্য একবার দেখা দিতে এলুম।

কাঞ্চী।

অনুগ্রহের এত আতিশয্য সহ্য করা কঠিন।

রাজবেশী।

আমি অধিকক্ষণ থাকব না।

কাঞ্চী।

সেটা অনুভবেই বুঝেছি; বেশিক্ষণ স্থায়ী হবার ভাব দেখছি নে।

রাজবেশী।

ইতিমধ্যে যদি কোনো প্রার্থনা থাকে--

কাঞ্চী।

আছে বৈকি। কিন্তু অনুচরদের সামনে জানাতে লজ্জা বোধ করি।

রাজবেশী।

(অনুবর্তীদের প্রতি) ক্ষণকালের জন্য তোমরা দূরে যাও। এইবার তোমাদের প্রার্থনা অসংকোচে জানাতে পার।

কাঞ্চী।

অসংকোচেই জানাব-- তোমারও যেন লেশমাত্র সংকোচ না হয়।

রাজবেশী।

না, সে আশঙ্কা কোরো না।

কাঞ্চী।

এসো তবে-- মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে আমাদের প্রত্যেককে প্রণাম করো।

রাজবেশী।

বোধ হচ্ছে, আমার ভৃত্যগণ বারুণী মদ্যটা রাজশিবিরে কিছু মুক্তহস্তেই বিতরণ করেছে।

কাঞ্চী।

ভণ্ডরাজ, মদ যাকে বলে সেটা তোমার ভাগেই অতিমাত্রায় পড়েছে, সেইজন্যেই এখন ধুলোয় লোটাবার অবস্থা হয়েছে।

রাজবেশী।

রাজগণ, পরিহাসটা রাজোচিত নয়।

কাঞ্চী।

পরিহাসের অধিকার যাদের আছে তারা নিকটেই প্রস্তুত আছে। সেনাপতি!

রাজবেশী।

আর প্রয়োজন নেই। স্পষ্টই দেখতে পাচ্ছি আপনারা আমার প্রণম্য। মাথা আপনিই নত হচ্ছে, কোনো তীক্ষ্ণ উপায়ে তাকে ধুলায় টানবার দরকার হবে না। আপনারা যখন আমাকে চিনেছেন তখন আমিও আপনাদের চিনে নিলুম। অতএব এই আমার প্রণাম গ্রহণ করুন। যদি দয়া করে পালাতে দেন তা হলে বিলম্ব করব না।

কাঞ্চী।

পালাবে কেন। তোমাকেই আমরা এখানকার রাজা করে দিচ্ছি-- পরিহাসটা শেষ করেই যাওয়া যাক। দলবল কিছু আছে?

রাজবেশী।

আছে। রাস্তার লোকে যে দেখছে আমার পিছনে ছুটে আসছে। আরম্ভে যখন আমার দল বেশি ছিল না তখন সবাই আমাকে সন্দেহ করছিল, লোক যত বেড়ে গেল সন্দেহ ততই দূর হল। এখন ভিড়ের লোক নিজেদের ভিড় দেখেই মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছে, আমাকে কোনো কষ্ট পেতে হচ্ছে না।

কাঞ্চী।

বেশ কথা। এখন থেকে আমরা তোমায় সাহায্য করব। কিন্তু তোমাকে আমাদেরও একটা কাজ করে দিতে হবে।

রাজবেশী।

আপনাদের দত্ত আদেশ এবং মুকুট আমি মাথায় করে রাখব।

কাঞ্চী।

আপাতত আর কিছু চাই নে, রানী সুদর্শনাকে দেখতে চাই। সেইটে তোমাকে করে দিতে হবে।

রাজবেশী।

যথাসাধ্য চেষ্টার ত্রুটি হবে না।

কাঞ্চী।

তোমার সাধ্যের উপর ভরসা নেই, আমাদের বুদ্ধিমত চলতে হবে। আচ্ছা, এখন তুমি কুঞ্জে প্রবেশ করে রাজ-আড়ম্বরে উৎসব করো গে।

[ রাজগণ ও রাজবেশীর প্রস্থান

[ রাজগণ ও রাজবেশীর প্রস্থান

ঠাকুরদা ও কুম্ভের প্রবেশ

ঠাকুরদা ও কুম্ভের প্রবেশ

কুম্ভ।

ঠাকুরদা, তোমার কথা আমি তেমন বুঝি নে, কিন্তু তোমাকে বুঝি। তা, আমার রাজায় কাজ নেই, তোমার পাছেই রয়ে গেলুম। কিন্তু ঠকলুম না তো?

ঠাকুরদা।

আমাকে নিয়েই যদি সম্পূর্ণ চলে তা হলে ঠকলি নে, আমার চেয়ে বেশি যদি কিছু দরকার থাকে তা হলে ঠকলি বৈকি।

কুম্ভ।

ঠাকুরদা, উৎসব শুরু হয়েছে, এবার ভিতরে চলো।

ঠাকুরদা।

না রে, আগে দ্বারের কাজটা সেরে নিই, তার পরে ভিতরে। এখানে সকল আগন্তুকের সঙ্গে একবার মিলে নিতে হবে। ঐ আমার অকিঞ্চনের দল আসছে।

অকিঞ্চনের দল। ঠাকুরদা, তোমাকে খুঁজে আজ আমাদের দেরি হয়ে গেল।

ঠাকুরদা।

আজ আমি দ্বারে, আজ আমাকে অন্য জায়গায় খুঁজলে মিলবে কেন।

প্রথম।

তুমি যে আমাদের উৎসবের সূত্রধর।

ঠাকুরদা।

তাই তো আমি দ্বারে।

দ্বিতীয়।

আজ তুমি বুঝি এই কুম্ভ সুধন মুষল তোষল এদের নিয়েই আছ? দেশ-বিদেশের কত রাজা এল, তাদের সঙ্গে পরিচয় করে নেবে না?

ঠাকুরদা।

ভাই, এরা সব সরল লোক। চুপ করে কেবল এদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকলেও এরা ভাবে, এদের যেন কত সেবা করলুম। আর যারা মস্ত লোক তাদের কাছেও মুণ্ডটাও যদি খসিয়ে দেওয়া যায় তারা মনে করে, লোকটা বাজে জিনিস দিয়ে ঠকিয়ে গেল।

প্রথম।

এখন চলো দাদা।

ঠাকুরদা।

না ভাই, আজ আমার এইখানেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চলা। সকলের চলাচলেই আমার মন ছুটছে। তবে আর কী; এইবারে শুরু করা যাক।

সকলের গান

সকলের গান

মোদের কিছু নাই রে নাই

আমরা ঘরে বাইরে গাই--

তাইরে নাইরে নাইরে না।

যতই দিবস যায় রে যায়

গাই রে সুখে হায় রে হায়--

তাইরে নাইরে নাইরে না।

যারা সোনার চোরাবালির 'পরে

পাকা ঘরের ভিত্তি গড়ে

তাদের সামনে মোরা গান গেয়ে যাই--

তাইরে নাইরে নাইরে না।

যখন থেকে থেকে গাঁঠের পানে,

গাঁঠ-কাটারা দৃষ্টি হানে

তখন শূন্য ঝুলি দেখায়ে গাই--

তাইরে নাইরে নাইরে না।

যখন দ্বারে আসে মরণ-বুড়ি

মুখে তাহার বাজাই তুড়ি,

তখন তান দিয়ে গান জুড়ি রে ভাই--

তাইরে নাইরে নাইরে না।

এ যে বসন্তরাজ এসেছে আজ,

বাইরে তাহার উজ্জ্বল সাজ,

ওরে অন্তরে তার বৈরাগী গায়--

তাইরে নাইরে নাইরে না।

সে যে উৎসবদিন চুকিয়ে দিয়ে,

ঝরিয়ে দিয়ে, শুকিয়ে দিয়ে,

দুই রিক্ত হাতে তাল দিয়ে গায়--

তাইরে নাইরে নাইরে না॥

[ প্রস্থান

[ প্রস্থান

একদল স্ত্রীলোকের প্রবেশ

একদল স্ত্রীলোকের প্রবেশ

প্রথমা।

ঠাকুরদা।

ঠাকুরদা।

কী ভাই।

প্রথমা।

আজ বসন্তপূর্ণিমার চাঁদের সঙ্গে মালা-বদল করব এই পণ করে ঘর থেকে বেরিয়েছি।

ঠাকুরদা।

কিন্তু পণ রক্ষা হওয়া কঠিন দেখছি।

দ্বিতীয়া।

কেন বলো তো।

ঠাকুরদা।

তোমাদের ঠাকরুনদিদি কেবল একখানিমাত্র মালা আমার গলায় পরিয়েছেন।

তৃতীয়া।

দেখেছ দেখেছ, ঠাকুরদার বিনয়টা একবার দেখেছ!

দ্বিতীয়া।

হায় রে হায়, আকাশের চাঁদের এতদূর অধঃপতন হল!

ঠাকুরদা।

যে ফাঁদ তোমরা পেতেছ, ধরা না দিয়ে বাঁচে কী করে।

প্রথমা।

তবে তাই বলো, আমাদের ফাঁদের গুণ।

ঠাকুরদা।

চাঁদেরও গুণ আছে উপযুক্ত ফাঁদ দেখলে সে আপনি ধরা দেয়।

তৃতীয়া।

আচ্ছা ঠাকরুনদিদির হিসেবটা কিরকম। আজ উৎসবের দিনে না-হয় দুটো বেশি করেই মালা দিতেন।

ঠাকুরদা।

যতই দিতেন কুলোত না, সেইজন্যে আজ একটিমাত্র দিয়েছেন। একটির কোনো বালাই নেই।

দ্বিতীয়া।

ঠাকুরদা, তুমি দরজা ছেড়ে নড়বে না?

ঠাকুরদা।

হাঁ ভাই, সকলকে এগিয়ে দেব, তার পর সব-শেষে আমি।

[ স্ত্রীলোকদের প্রস্থান

[ স্ত্রীলোকদের প্রস্থান

নাচের দলের প্রবেশ

নাচের দলের প্রবেশ

ঠাকুরদা।

আরে, এসো এসো।

প্রথম।

আমাদের নটরাজ তুমি, তোমাকে খুঁজে বেড়াচ্ছিলুম।

ঠাকুরদা।

আমি দরজার কাছে খাড়া আছি; জানি, এইখান দিয়েই সবাইকে যেতে হবে। তোমাদের দেখলেই পা-দুটো ছট্‌ফট্‌ করে। একবার নাচিয়ে দিয়ে যাও।

নৃত্য ও গীত

মম চিত্তে নিতি নৃত্যে কে যে নাচে

তাতা থৈথৈ তাতা থৈথৈ তাতা থৈথৈ।

তারি সঙ্গে কী মৃদঙ্গে সদা বাজে

তাতা থৈথৈ তাতা থৈথৈ তাতা থৈথৈ।

হাসিকান্না হীরাপান্না দোলে ভালে,

কাঁপে ছন্দে ভালোমন্দ তালে তালে,

নাচে জন্ম, নাচে মৃত্যু পাছে পাছে

তাতা থৈথৈ তাতা থৈ থৈ তাতা থৈথৈ।

কী আনন্দ, কী আনন্দ, কী আনন্দ--

দিবারাত্রি নাচে মুক্তি, নাচে বন্ধ,

সে তরঙ্গে ছুটি রঙ্গে পাছে পাছে

তাতা থৈথৈ তাতা থৈথৈ তাতা থৈথৈ॥

ঠাকুরদা।

যাও যাও ভাই, তোমরা নেচে বেড়াও গে, নাচিয়ে বেড়াও গে যাও।

[ নাচের দলের প্রস্থান

নাগরিকদল

প্রথম।

ঠাকুরদা, আমাদের রাজা নেই এ কথা দুশো বার বলব।

ঠাকুরদা।

কেবলমাত্র দুশো বার? এত কঠিন সংযমের দরকার কী--পাঁচশো বার বল্‌-না।

দ্বিতীয়।

ফাঁকি দিয়ে কতদিন তোমরা মানুষকে ভুলিয়ে রাখবে।

ঠাকুরদা।

নিজেও ভুলেছি ভাই।

তৃতীয়।

আমরা চারি দিকে প্রচার করে বেড়াব, আমাদের রাজা নেই।

ঠাকুরদা।

কার সঙ্গে ঝগড়া করবে বলো। তোমাদের রাজা তো কারো কানে ধরে বলছেন না "আমি আছি'। তিনি তো বলেন, তোমরাই আছ। তাঁর সবই তো তোমাদেরই জন্যে।

প্রথম।

এই তো, আমরা রাস্তা দিয়ে চেঁচিয়ে যাচ্ছি-- "রাজা নেই'। যদি রাজা থাকে সে কী করতে পারে করুক-না।

ঠাকুরদা।

কিচ্ছু করবে না।

দ্বিতীয়।

আমার পঁচিশ বছরের ছেলেটা সাত দিনের জ্বরে মারা গেল। দেশে যদি ধর্মের রাজা থাকবে তবে কি এমন অকালমৃত্যু ঘটে।

ঠাকুরদা।

ওরে, তবু তো এখনো তোর দু ছেলে আছে-- আমার যে একে একে পাঁচ ছেলে মারা গেল, একটি বাকি রইল না।

তৃতীয়।

তবে?

ঠাকুরদা।

তবে কী রে। ছেলে তো গেলই, তাই বলে কি ঝগড়া করে রাজাকেও হারাব। এমনি বোকা!

প্রথম।

ঘরে যাদের অন্ন জোটে না তাদের আবার রাজা কিসের!

ঠাকুরদা।

ঠিক বলেছিস ভাই। তা সেই অন্ন-রাজকেই খুঁজে বের কর্‌! ঘরে বসে হাহাকার করলেই তো তিনি দর্শন দেবেন না।

দ্বিতীয়।

আমাদের রাজার বিচারটা কিরকম দেখো না। ঐ আমাদের ভদ্রসেন, রাজা বলতে সে একেবারে অজ্ঞান হয়ে পড়ে, কিন্তু তার ঘরের এমন দশা যে চামচিকেগুলোরও থাকবার কষ্ট হয়।

ঠাকুরদা।

আমার দশাটাই দেখ্‌-না। রাজার দরজায় সমস্ত দিনই তো খাটছি-- আজ পর্যন্ত দুটো পয়সা পুরস্কার মিলল না।

তৃতীয়।

তবে?

ঠাকুরদা।

তবে কী রে। তাই নিয়েই তো আমার অহংকার। বন্ধুকে কি কেউ কোনোদিন পুরস্কার দেয়। তা, যা ভাই, আনন্দ করে বলে বেড়া গে-- রাজা নেই। আজ আমাদের নানা সুরের উৎসব-- সব সুরই ঠিক এক তানে মিলবে।

গান

বসন্তে কি শুধু কেবল ফোটা ফুলের মেলা রে।

দেখিস নে কি শুকনো পাতা ঝরা ফুলের খেলা রে।

যে ঢেউ ওঠে তারি সুরে

বাজে কি গান সাগর জুড়ে।

যে ঢেউ পড়ে তাহারো সুর জাগছে সারা বেলা রে।

বসন্তে আজ দেখ্‌ রে তোরা ঝরা ফুলের খেলা রে।

আমার প্রভুর পায়ের তলে

শুধুই কি রে মানিক জ্বলে।

চরণে তাঁর লুটিয়ে কাঁদে লক্ষ মাটির ঢেলা রে।

আমার গুরুর আসন-কাছে

সুবোধ ছেলে ক'জন আছে।

অবোধ জনে কোল দিয়েছেন, তাই আমি তাঁর চেলা রে।

উৎসবরাজ দেখেন চেয়ে ঝরা ফুলের খেলা রে॥
1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 | 9...20