রানীর প্রাসাদ-দ্বার

রানীর প্রাসাদ-দ্বার

রাজবেশী।

এ কী কাণ্ড করেছ কাঞ্চীরাজ।

কাঞ্চী।

আমি কেবল এই প্রাসাদের কাছটাতেই আগুন ধরাতে চেয়েছিলুম, সে আগুন যে এত শীঘ্র এমন চার দিকে ধরে উঠবে সে তো আমি মনেও করি নি। এ বাগান থেকে বেরোবার পথ কোথায় শীঘ্র বলে দাও।

রাজবেশী।

পথ কোথায় আমি তো কিছুই জানি নে। যারা আমাদের এখানে এনেছিল তাদের একজনকেও দেখছি নে।

কাঞ্চী।

তুমি তো এ দেশের লোক-- পথ নিশ্চয় জান।

রাজবেশী।

অন্তঃপুরের বাগানে কোনোদিনই প্রবেশ করি নি।

কাঞ্চী।

সে আমি বুঝি নে, তোমাকে পথ বলতেই হবে, নইলে তোমাকে দু-টুকরো করে কেটে ফেলব।

রাজবেশী।

তাতে প্রাণ বেরোবে, পথ বেরোবার কোনো উপায় হবে না।

কাঞ্চী।

তবে কেন বলে বেড়াচ্ছিলে তুমিই এখানকার রাজা।

রাজবেশী।

আমি রাজা না, রাজা না। (মাটিতে পড়িয়া জোড়করে) কোথায় আমার রাজা, রক্ষা করো। আমি পাপিষ্ঠ, আমাকে রক্ষা করো। আমি বিদ্রোহী, আমাকে দণ্ড দাও, কিন্তু রক্ষা করো।

কাঞ্চী।

অমন শূন্যতার কাছে চীৎকার করে লাভ কী। ততক্ষণ পথ বের করবার চেষ্টা করা যাক্‌।

রাজবেশী।

আমি এইখানেই পড়ে রইলুম-- আমার যা হবার তাই হবে।

কাঞ্চী।

সে হবে না। পুড়ে মরি তো একলা মরব না, তোমাকে সঙ্গী নেব।

নেপথ্য হইতে। রক্ষা করো রাজা, রক্ষা করো। চারি দিকে আগুন।

কাঞ্চী।

মূঢ়, ওঠ্‌, আর দেরি না।

সুদর্শনা।

(প্রবেশ করিয়া) রাজা, রক্ষা করো। আগুনে ঘিরেছে।

রাজবেশী।

কোথায় রাজা। আমি রাজা নই।

সুদর্শনা।

তুমি রাজা নও!

রাজবেশী।

আমি ভণ্ড, আমি পাষণ্ড। (মুকুট মাটিতে ফেলিয়া) আমার ছলনা ধূলিসাৎ হোক।

[ কাঞ্চীরাজের সহিত প্রস্থান

[ কাঞ্চীরাজের সহিত প্রস্থান

সুদর্শনা।

রাজা নয়! এ রাজা নয়! তবে, ভগবান হুতাশন, দগ্ধ করো আমাকে; আমি তোমারই হাতে আত্মসমর্পণ করব। হে পাবন, আমার লজ্জা, আমার বাসনা পুড়িয়ে ছাই করে ফেলো।

রোহিণী।

(প্রবেশ করিয়া) রানী, ও দিকে কোথায় যাও। তোমার অন্তঃপুরের চার দিকে আগুন ধরে গেছে, ওর মধ্যে প্রবেশ কোরো না।

সুদর্শনা।

আমি তারই মধ্যে প্রবেশ করব। এ আমারই মরবারই আগুন।

[ প্রাসাদে প্রবেশ

[ প্রাসাদে প্রবেশ
1...3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 | 9 | 10 | 11...20